সাব-ইন্সপেক্টরদের(SI) মৌলিক প্রশিক্ষণ ও পূর্ব প্রস্তুতি, বাংলাদেশ পুলিশ।

বাংলাদেশ সরকারের সকল চাকরিতে মৌলিক প্রশিক্ষণ থাকে। বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের মৌলিক প্রশিক্ষণের ধরন ও ভিন্ন ভিন্ন হয়। তেমনি পদের ভিন্নতায় প্রশিক্ষণের ধরন ও ভিন্ন ভিন্ন হয়। আবার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রশিক্ষণের ধারণা হয় আলাদা। বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বাহিনী হল বাংলাদেশ পুলিশ। বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর চাকরির জীবনের শুরুতে রয়েছে এই প্রশিক্ষন। পুলিশ বাহিনীর বিভিন্ন পদবীর প্রশিক্ষণের মেয়াদকাল ভিন্ন ভিন্ন হয়। আমরা বাংলাদেশ পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর এসআই পদের মৌলিক প্রশিক্ষণ সম্পর্কে  বিস্তারিত আলোচনা করব।

বাংলাদেশ পুলিশের মৌলিক প্রশিক্ষণ কি?

আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে একটি অন্যতম বাহিনী বাংলাদেশ পুলিশ। তিনটি পদে বাংলাদেশ পুলিশের সরাসরি জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়। পদ তিনটি হলো কনস্টেবল, এস আই এবং এ এস পি। প্রতিটি পদের চাকরি জীবনের শুরুতে রয়েছে প্রশিক্ষণ। পুলিশের চাকরি জীবনের শুরুতে শারীরিক ও একাডেমিক যে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় তাই মৌলিক প্রশিক্ষণ। এই প্রশিক্ষণের দুইটি পার্টস। একটি অংশ হল শারীরিক অপরটি হলো একাডেমিক।

পুলিশের মৌলিক প্রশিক্ষণের ধরন ও মেয়াদকাল 

তিনটি পদবীতে সরাসরি জনবল নিয়োগ দেয় বাংলাদেশ পুলিশ। অ্যাসিস্ট্যান্ট পুলিশ কমিশনার (ASP), সাব-ইন্সপেক্টর(SI) ও কনস্টেবল এই তিনটি পদে সরাসরি জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়। প্রশিক্ষণের দুইটি অংশ। ফিটনেস উন্নতির জন্য একটি অংশ হল শারীরিক প্রশিক্ষণ। আইন বিষয়ে দক্ষ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য অপরটি হলো একাডেমিক প্রশিক্ষণ। তিনটি পদের প্রশিক্ষণের মেয়াদকালে এবং প্রশিক্ষণের ধরনের রয়েছে একটু ভিন্নতা।

এক বছর মেয়াদী প্রশিক্ষণ হয় অ্যাসিস্ট্যান্ট পুলিশ কমিশনার (ASP) ও সাব-ইন্সপেক্টরদের। কনস্টেবলদের প্রশিক্ষণের মেয়াদকাল হয় ছয় মাস। শারীরিক প্রশিক্ষণ ও একাডেমিক প্রশিক্ষণ একত্রে চলতে থাকে। কনস্টেবলদের প্রশিক্ষণ ৬ মাস হলেও পরবর্তীতে প্রমোশনের সময় আবার প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করতে হয়। বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমি রাজশাহী সারদায় এ এস পি ও সাব-ইন্সপেক্টর ট্রেনিং অনুষ্ঠিত হয়। কনস্টেবলদের প্রশিক্ষণ দেশের কয়েকটা কেন্দ্র হয়ে থাকে।

সাব-ইন্সপেক্টরদের মৌলিক প্রশিক্ষণ

পুলিশের উপ-পরিদর্শক ক্যাডেটদের এক বছর মেয়াদি মৌলিক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে। লিখিত এবং বুদ্ধিমত্তা ও মৌখিক পরীক্ষার পর স্বাস্থ্য পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে মৌলিক প্রশিক্ষণ শুরু হয়। এক বছর মেয়াদি এই প্রশিক্ষণে প্রশিক্ষণ কালীন ভাতা পাওয়া যায়।পুলিশ কর্মকর্তাদের দুইটি অংশের প্রশিক্ষণে রয়েছে অনেক আনন্দময় সময়। একটি ব্যাচের সকল এসআই ক্যাডেট বিভিন্ন দলে দলে ভাগ হয়ে এই উক্ত প্রশিক্ষণ করে থাকেন। উক্ত প্রশিক্ষণের মাঝামাঝি সময়ে মিড টার্ম পরীক্ষা হয়। প্রশিক্ষণের অংশ হিসেবে খেলাধুলা ও আনন্দ বিনোদন থাকে। সাব ইন্সপেক্টর দের শারীরিক প্রশিক্ষণে একজন সুস্থ, সুঠাম ও সুদর্শন কর্মকর্তা হিসেবে গড়ে তোলা হয়। আর একাডেমিক প্রশিক্ষণে সম্পূর্ণ আইন শিখিয়ে দক্ষ কর্মকর্তা হিসেবে গড়ে তোলা হয়।

বাংলাদেশ পুলিশের ক্যাডেট সাব-ইন্সপেক্টর(SI) (নিরস্ত্র) দের লিখিত এবং বুদ্ধিমত্তা ও মৌখিক পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয় গত ১৩ অক্টোবর ২০২৩ ইং তারিখ। চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করা হয়। কেন্দ্রীয় পলিশ হাসপাতাল, রাজারবাগে স্বাস্থ্য পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ১৭ অক্টোবর ২০২৩ ইং তারিখ হতে শুরু হবে এই স্বাস্থ্য পরীক্ষা। এই স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে সবাই মৌলিক প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করবে।

ক্যাডেটদের মৌলিক প্রশিক্ষণ ও পূর্ব প্রস্তুতি 

আমাদের সকলের ধারণা প্রশিক্ষণ মনে হয় অনেক কঠিন। কিন্তু না, একটু পূর্ব প্রস্তুতি নিলে অনেক আনন্দদায়ক ও উপভোগ্য হয় এই প্রশিক্ষণ। শিখনের শারীরিক অংশে অনেকের অভ্যস্ততা না থাকার কারণে প্রথমে একটু অসুবিধায় মনে হয়। অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই তা সহজ হয়ে যায়। স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হলেই আস্তে আস্তে আল্প করে পস্তুতি নিলেই হয়। প্রতিদিন সকালে ১০ থেকে ২০ মিনিট দৌড়ালে অর্ধেক প্রস্তুতি হয়ে যায়। পাশাপাশি হালকা শারীরিক ব্যায়াম করলে পূর্ণ প্রস্তুতি হয়ে যায়।